মায়ের অধিকার নিয়ে হাদিসে যা বলা হয়েছে
ইসলামী জীবন ডেস্ক : সন্তানের জন্য তুলনামূলকভাবে মা-ই বেশি ত্যাগ স্বীকার করেন। গর্ভধারণ, দুধপান, রাত জেগে সন্তানের তত্ত্বাবধানসহ নানাবিধ কষ্ট একমাত্র মা-ই সহ্য করেন। তা ছাড়া সন্তানের প্রতি মা-ই সবচেয়ে বেশি যত্নবান ও বেশি আদর-সোহাগ করে থাকেন। চলুন আজকে জেনে নেই মায়ের অধিকার নিয়ে হাদিসে যা বলা হয়েছে
কোরআনে কারিমে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি মানুষকে মা-বাবার সঙ্গে সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে অতি কষ্টে গর্ভে ধারণ করেছেন এবং অতি কষ্টে তাকে প্রসব করেছেন। তার গর্ভধারণ ও দুধপান ছাড়ানোর সময় লাগে ৩০ মাস। অবশেষে যখন সে তার শক্তির পূর্ণতায় পৌঁছে এবং ৪০ বছরে উপনীত হয়, তখন সে বলে, হে আমার রব, আমাকে সামর্থ্য দাও, তুমি আমার ওপর ও আমার মা-বাবার ওপর যে নিয়ামত দান করেছ, তোমার সে নিয়ামতের যেন আমি কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারি এবং আমি যেন ভালো কাজ করতে পারি, যা তুমি পছন্দ করো। আর আমার জন্য তুমি আমার বংশধরদের মধ্যে সংশোধন করে দাও। নিশ্চয় আমি তোমার কাছে তাওবা করলাম এবং নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সুরা আহকাফ, আয়াত : ১৫)
রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, ‘মা-বাবাই হলো তোমার জান্নাত এবং জাহান্নাম।’ (ইবনে মাজাহ, মিশকাত, ৪২১)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, যখন কোনো অনুগত সন্তান নিজের মা-বাবার দিকে অনুগ্রহের নজরে দেখে, মহান আল্লাহ তার প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে একটি করে কবুল হজের সাওয়াব দান করেন। (বায়হাকি, মিশকাত, ৪২১)।
ইসলাম মা-বাবা দুজনের সঙ্গে সদাচারণের নির্দেশ দিয়েছে, তবে ইসলামে বাবার তুলনায় মায়ের অধিকার ও হক বেশি এবং মায়ের অধিকারের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলেছেন রাসূল সা.।
একবার এক সাহাবি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, আমার সুন্দর ব্যবহার পাওয়ার সবচেয়ে বেশি হকদার কে? আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্টভাবে ঘোষণা করলেন, তোমার মা। সাহাবি আবার জিজ্ঞেস করলেন, আমার মায়ের পরে আমি কার সঙ্গে সুন্দর আচরণ করব? আল্লাহর নবী তাগিদ দেয়ার জন্য বললেন, তোমার মায়ের পরেও তোমার মায়ের অধিকার পালন করতে হবে। তার সঙ্গে সুন্দর আচরণ তোমাকে করতে হবে। এভাবে তিনবার আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মায়ের সঙ্গে সদাচরণ করার কথা বলেছেন। চতুর্থবার বলেছেন, অতঃপর তুমি তোমার বাবার সঙ্গে সুন্দর আচরণ করবে। (বুখারি ও মুসলিম)