আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিচার কেন সামরিক আদালতে হবে, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তা জানতে চেয়েছে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন দেশটির হাইকোর্ট। খবর ডনের
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে, যেগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে তাঁর বিচার সামরিক আদালতে হবে। তবে কী প্রমাণ, সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলেননি তিনি।
খাজা আসিফ এ কথা বলেছিলেন পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর প্রেস উইংয়ের প্রধান জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরীর এক সংবাদ সম্মেলনের পর। ৫ সেপ্টেম্বরের ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য সেনাসদস্যদের সঙ্গে যেসব বেসামরিক লোকজন ষড়যন্ত্র করবেন, তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে।
গত বছরের ৯ মে একটি দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হন ইমরান খান। এর প্রতিবাদে সেদিন বিক্ষোভ করেন তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফের (পিটিআই) নেতা–কর্মীরা। হামলা চালানো হয় অনেক সামরিক স্থাপনায়। এ ঘটনার জেরে হাজারো মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মধ্যে সামরিক আদালতে বিচার হয় প্রায় ১০০ জনের। ওই বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে ইমরানেরও সামরিক আদালতে বিচার হতে পারে বলে জল্পনা রয়েছে।
পাকিস্তানের সরকার বলছে, দেশটির সংবিধানে বেসামরিক নাগরিকদের সামরিক আদালতে বিচারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ইমরানের বিরুদ্ধে কি সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হবে
পাকিস্তানের সামরিক আইন অনুযায়ী, ব্যতিক্রম পরিস্থিতিতে বেসামরিক লোকজনকে সামরিক আদালতে নিয়ে বিচার করা যেতে পারে। এই আইনে ইমরান খানেরও বিচার হতে পারে কি না, এমন প্রশ্ন ঘিরে আইনি বিতর্ক দেখা দিয়েছে। যদিও জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, তাতে সুনির্দিষ্টভাবে ইমরানের নাম উল্লেখ করেননি।
৯ মের সহিংসতার জন্য সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইমরান খান আঁতাত করেছিলেন, এমন অভিযোগ এখনো আনেনি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। তবে সম্প্রতি পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দাপ্রধান ফাইজ হামিদ ও তাঁর তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে সামরিক আদালতে বিচার শুরু হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নেওয়া আইনি পদক্ষেপের সঙ্গে ইমরানকে জড়ানো হতে পারে কি না, তা নিয়ে জল্পনা চলছে।
পাকিস্তানে সামরিক আদালতে বেসামরিক নাগরিকদের বিচারের ইতিহাস রয়েছে। তবে কোনো সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এ আদালতে বিচার করা হয়নি। ২০২৩ সালে গ্রেপ্তারের পর তিনটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ইমরান খান। রাষ্ট্রীয় উপহার তছরুপের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকায় তিনি এখন রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী। আদালতের আদেশে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া তিনটি রায়ই হয় বাতিল, না হয় স্থগিত করা হয়েছে। তবে ৯ মে সহিংসতার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।