সুরা ফাতিহার ফজিলত ও আমল

  • ইসলামী জীবন ডেস্ক: সুরা ফাতিহা পবিত্র কোরআনের প্রথম সুরা। ফাতিহা ছাড়াও সাবউল মাসানী, উম্মুল কোরআন, ফাতিহাতুল কিতাবসহ একাধিক নাম রয়েছে এ সুরার। আল্লাহ তায়ালা এই সুরায় বান্দার করণীয় বিষয়ে জানিয়েছেন। এ সুরার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে একাধিক বর্ণনা রয়েছে। এর আমলের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

মোল্লা আলী কারী (রহ.) বলেন, ‘সূরা ফাতেহার অক্ষর, শব্দ পড়াতে যেমন শেফা আছে তেমনি লেখাতেও শেফা আছে। যে কোনো ধরনের রোগ চাই দ্বীনি হোক কিংবা পার্থিব, অনুভবযোগ্য হোক বা না হোক সব কিছু এ সূরা পড়া বা লেখার বরকতে আল্লাহর ইচ্ছায় আরোগ্য হবে।’ -(মিরকাতুল মাফাতিহ)

এ বিষয়ে হজরত আবদুল মালেক ইবনে ওমায়ের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সূরা ফাতেহা সব রোগের মহৌষধ।’- (সুনানে দারেমি, হাদিস ৩৪১৩; মিশকাত, হাদিস ২১৭০)।

হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, কয়েকজন সাহাবি আরবের এক গোত্রে এলেন। গোত্রের লোকেরা তাদের কোনো মেহমানদারি করল না। হঠাৎ ওই গোত্রের নেতাকে সাপে কাটে। তখন তারা এসে বলল, আপনাদের কাছে কি কোনো ওষুধ আছে?

তারা উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, আছে। তবে তোমাদের আমাদের মেহমানদারি করতে হবে। আমরা প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত। তারা মেহমানদারি করতে রাজি হল। এ ছাড়া আমরা তাদের কাছে একপাল বকরি চাইলাম। তখন একজন সাহাবি উম্মুল কোরআন অর্থাৎ সূরা ফাতেহা পড়ে মুখে থুথু জমা করে সে ব্যক্তির ক্ষতে মেখে দিলেন। ফলে বিষ নেমে গেল এবং সে সুস্থ হয়ে গেল।

সাহাবিরা খাওয়া-দাওয়া করে নবী করিম (সা.)-এর কাছে বকরিসহ ফিরে এলেন। তারা রাসূল (সা.)-এর কাছে জানতে চাইলেন তাদের এ ধরনের কাজ ঠিক হল কি না। নবী (সা.) শুনে মুচকি হাসলেন এবং বললেন, ঠিক আছে বকরিগুলো নিয়ে যাও এবং তাতে আমার জন্যও একটি অংশ রেখে দিও।’ (বুখারি, হাদিস ৫০০৬)।

হজরত আবু সাঈদ ইবনে মুয়াল্লা রা: বর্ণিত হয়েছে। একদা হজরত রাসূল সা: বললেন, আমি কি মসজিদ থেকে বের হওয়ার আগে তোমাকে কুরআনের শ্রেষ্ঠতর সূরা শিক্ষা দেবো না? তারপর যখন মসজিদ থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলাম, তখন বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি না আমাকে কুরআনের শ্রেষ্ঠতর সূরা শেখাবার কথা বলেছিলেন? তিনি বললেন, তা হলো সূরা ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন’। এটিই সেই সাতটি পুনঃ আয়াত এবং আমাকে প্রদত্ত মহা কুরআন। ( সুনানে দারেমি. ৪, ২১২২)

সুরা ফাতিহাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সমগ্র রোগের মহৌষধ। বহু হাদিসে সুরা ফাতিহার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।

হজরত জাফর সাদেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, সুরা ফাতেহা ৪০ বার পাঠ করে পানির ওপর দম করে কোনো জ্বরে আক্রন্ত লোকের মুখমণ্ডলে ছিঁটিয়ে দিলে, এর বরকতে জ্বর দূরীভূত হয়ে যাবে।

  • ফজরের নামাজের সুন্নত ও ফরজ নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে ৪১ বার এ সুরা পাঠ করে চোখে ফুঁ দিলে চোখের ব্যথা দূর হয়।
  • শেষ রাতে এ সুরা ৪১ বার তেলাওয়াত করলে আল্লাহ তাআলা রিজিক বাড়িয়ে দেন।
  • এ সুরা ৪০ দিন নিয়মিত তেলাওয়াত করে পানিতে ফুঁ দিয়ে অসুস্থ ব্যক্তিকে পান করালে আল্লাহ অসুস্থতা দূর করে দেবেন। -( বুখারি, ৬/১৮৭)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সংশ্লিষ্ট

Back to top button